শিশুদের আমাশয় হলে করণীয়

শিশুদের আমাশয় (Dysentery) একটি সাধারণ পেটের সমস্যা, যা মূলত সংক্রমণের কারণে হয়। এটি মূলত ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত রোগ হতে পারে, এবং এতে ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, জ্বর ও রক্তমিশ্রিত পায়খানা হতে পারে। দ্রুত প্রতিকার না করা হলে এটি শিশুর শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি তৈরি করতে পারে, যা শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

শিশুদের আমাশয়ের কারণ:

  1. ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়া যেমন শিগেলা (Shigella), স্যালমোনেলা (Salmonella) ইত্যাদি সংক্রমণের মাধ্যমে আমাশয় হতে পারে।
  2. ভাইরাস সংক্রমণ: রোটা ভাইরাস বা নরো ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া এবং আমাশয় হতে পারে।
  3. প্যারাসাইট: কিছু প্যারাসাইট যেমন অ্যামিবা বা জিআরডিয়া সংক্রমণ থেকেও আমাশয় হতে পারে।
  4. অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানি: দূষিত পানি, নোংরা খাবার বা পরিষ্কার না থাকা হাতে খাবার খেলে আমাশয়ের ঝুঁকি থাকে।

    raju akon youtube channel subscribtion

শিশুদের আমাশয়ের লক্ষণ:

  1. বারবার পাতলা পায়খানা: শিশু বারবার পাতলা পায়খানা করতে থাকে।
  2. পায়খানায় রক্ত ও মিউকাস: পায়খানায় রক্ত বা মিউকাস থাকতে পারে।
  3. পেটে ব্যথা: শিশুর পেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
  4. জ্বর: শিশুর জ্বর হতে পারে।
  5. দুর্বলতা: অতিরিক্ত ডায়রিয়া হলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পানিশূন্যতা দেখা দেয়।

করণীয়:

  1. পানিশূন্যতা প্রতিরোধ: শিশুকে বেশি পরিমাণে স্যালাইন এবং পানীয় দিন যাতে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হয়। Oral Rehydration Solution (ORS) শিশুর জন্য খুব কার্যকর।
  2. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খাবার ও পানীয় সরবরাহ করুন। হাত ধুয়ে খেতে বসানো উচিত।
  3. পুষ্টিকর খাবার: শিশুকে সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। পাতলা খিচুড়ি, স্যুপ, ডাবের পানি ইত্যাদি শিশুদের জন্য উপকারী।
  4. মায়ের দুধ: শিশু যদি খুব ছোট হয়, তবে মায়ের দুধ খাওয়ানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  5. প্রোবায়োটিক: প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার যেমন দই শিশুর হজমশক্তি ভালো করতে সহায়ক।
  6. চিকিৎসকের পরামর্শ: আমাশয় গুরুতর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।

সতর্কতা:

  • যদি শিশুর ডায়রিয়া দীর্ঘস্থায়ী হয়, পায়খানায় রক্ত থাকে, অথবা শিশুর প্রচণ্ড দুর্বলতা দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • শিশুকে আমাশয় থেকে সুরক্ষিত রাখতে অবশ্যই পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও পানি নিশ্চিত করা উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top