পেট খারাপ বা ডায়রিয়া একাধিক কারণে হতে পারে এবং এটি শরীরের পানিশূন্যতা এবং পুষ্টির ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে। ঘন ঘন পেট খারাপ হওয়া দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এর পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে।
ঘন ঘন পেট খারাপ হওয়ার কারণ:
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: বাইরের খাবার, অস্বাস্থ্যকর খাবার বা পানীয় পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- জীবাণু সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, বা প্যারাসাইট সংক্রমণ থেকে পেট খারাপ হতে পারে। যেমন, ই-কোলাই, স্যালমোনেলা ইত্যাদি জীবাণু।
- দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার অসহিষ্ণুতা: অনেকে ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা (lactose intolerance) থাকলে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে পেট খারাপ হয়।
- ফুড পয়জনিং: দূষিত খাবার বা পানীয় গ্রহণ করলে ফুড পয়জনিং হয়ে পেট খারাপ হতে পারে।
- ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS): এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী পেটের রোগ যা পেটে ব্যথা, গ্যাস, এবং ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করতে পারে।
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধ, বিশেষত অ্যান্টিবায়োটিক, ঘন ঘন পেট খারাপের কারণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার: অতিরিক্ত মশলা, তৈলাক্ত এবং ফাস্ট ফুড খেলে পেট খারাপ হতে পারে।
- মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ পেটের সমস্যার অন্যতম কারণ।
- অ্যালার্জি: খাবারের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে পেট খারাপ হওয়া স্বাভাবিক।
প্রতিকার:
- পরিষ্কার খাবার ও পানি: বিশুদ্ধ খাবার এবং পরিষ্কার পানির অভ্যাস গড়ে তুলুন। বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন।
- প্রোবায়োটিক গ্রহণ: দই বা প্রোবায়োটিক খাবার গ্রহণ করলে হজমে সহায়তা হয় এবং পেট খারাপ কমাতে পারে।
- অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ নিন এবং অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক এড়িয়ে চলুন।
- পানিশূন্যতা রোধ: পেট খারাপের সময় বেশি পরিমাণে পানি, স্যালাইন বা ইলেকট্রোলাইট গ্রহণ করুন।
- ফাইবারযুক্ত খাবার: শাকসবজি, ফলমূল ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া সঠিক থাকে।
- দুধ এড়িয়ে চলা: যদি ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকে, তবে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- মানসিক প্রশান্তি: চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন, কারণ মানসিক চাপ পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।
- ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলা: বেশি তেল, মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
চিকিৎসকের পরামর্শ:
- যদি পেট খারাপ নিয়মিত হয় এবং বাড়িতে প্রতিকার কার্যকর না হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষ করে যদি পেট খারাপের সঙ্গে জ্বর, রক্ত বা অতিরিক্ত পানিশূন্যতা হয়।