দাঁতের মাড়ির ক্ষয় বা গাম রিসেশন (Gum Recession) এমন একটি সমস্যা, যা সময়মতো প্রতিকার না করলে দাঁত ও মুখের অন্যান্য অংশে সমস্যা তৈরি করতে পারে। দাঁতের মাড়ি ক্ষয় হলে দাঁতের শিকড় বেরিয়ে পড়ে এবং দাঁতে সংবেদনশীলতা ও ইনফেকশন দেখা দেয়। দাঁতের মাড়ি ক্ষয় প্রতিরোধে কিছু সঠিক অভ্যাস ও যত্ন নেয়া প্রয়োজন।
দাঁতের মাড়ি ক্ষয়ের কারণ:
- অসুস্থ ও অযত্নে থাকা মাড়ি: মাড়ি স্বাস্থ্যকর না থাকলে ক্ষয় হতে শুরু করে।
- খারাপ ব্রাশিং পদ্ধতি: খুব শক্তভাবে বা সঠিক নিয়মে ব্রাশ না করলে মাড়ির ক্ষতি হয়।
- জিনজিভাইটিস (Gingivitis): দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন হলে এটি ক্ষয় হতে পারে।
- দাঁতের ফাঁক ও প্লাক: দাঁতের ফাঁকে জমা হওয়া প্লাক ও ব্যাকটেরিয়া মাড়ির ক্ষয় বাড়ায়।
- অত্যধিক তামাক ও মদ্যপান: তামাক ও মদ দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
- হারমোনাল পরিবর্তন: মহিলাদের ক্ষেত্রে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাড়ি দুর্বল হতে পারে।
- দাঁতে অতিরিক্ত চাপ (Bruxism): দাঁতে চাপ দিলে মাড়ির ক্ষয় হতে পারে।
- বয়সজনিত সমস্যা: বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মাড়ি দুর্বল হতে পারে।
দাঁতের মাড়ি ক্ষয় রোধে করণীয়:
১. সঠিক ব্রাশিং পদ্ধতি অনুসরণ:
- দিনে দুইবার নরম ব্রিসল ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন। খুব জোরে ব্রাশ করবেন না, এতে মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
২. মুখ পরিষ্কার রাখা:
- খাবারের পরে মুখ ধোয়ার অভ্যাস করুন এবং দাঁতের ফাঁকে ফাঁসে খাবার আটকে থাকলে তা ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার করুন।
৩. মেডিকেটেড মাউথওয়াশ ব্যবহার:
- গাম রিসেশনের প্রতিরোধে বিশেষ মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে, যা মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করবে।
৪. দাঁতের প্লাক নিয়ন্ত্রণ:
- নিয়মিত দাঁতের প্লাক পরিষ্কার করতে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন।
৫. খাদ্যাভ্যাস:
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু, কমলা, আমলকি খেলে মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এছাড়া প্রচুর পানি পান করুন।
৬. তামাক ও মদ্যপান এড়িয়ে চলুন:
- তামাক ও মদ মাড়ির ক্ষতি করে, তাই এগুলো থেকে বিরত থাকুন।
৭. দাঁতের রক্ষাকবচ (Mouthguard):
- যদি দাঁতে চাপ দেয়ার সমস্যা থাকে (Bruxism), তাহলে বিশেষ Mouthguard ব্যবহার করতে পারেন।
৮. ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন:
- দাঁতের মাড়ির সমস্যায় ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না। প্রয়োজন হলে গাম গ্রাফটিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োগ করা হতে পারে।
চিকিৎসা:
যদি মাড়ির ক্ষয় বেশি হয়ে যায়, তাহলে দাঁতের ডাক্তার প্লাক পরিষ্কার, স্কেলিং ও রুট প্ল্যানিং এর মাধ্যমে ক্ষয় প্রতিরোধের চেষ্টা করতে পারেন। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে গাম গ্রাফটিং বা শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।