মেহ রোগ, যা ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত, এমন একটি সমস্যা যা শরীরে অস্বাভাবিক পরিমাণে শর্করা জমা হওয়ার ফলে হয়। এটি মূলত রক্তে গ্লুকোজের অতিরিক্ততা এবং শরীরের ইনসুলিন ব্যবহারের অক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত। মেহ রোগের চিকিৎসার জন্য প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কিছু করণীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখে।
মেহ রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা:
১. করলার রস:
- করলার রস মেহ রোগ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। করলায় প্রচুর পরিমাণে ইনসুলিনের মতো গুণাগুণ রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার রস খেলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. মেথি বীজ:
- মেথি বীজ মেহ রোগের জন্য একটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে রয়েছে ফাইবার, যা রক্তে শর্করার শোষণ কমায়।
- রাতে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মেথি বীজ ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৩. আমলকি:
- আমলকি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে, যা ইনসুলিন তৈরিতে সহায়তা করে। রোজ সকালে আমলকি রস বা গুঁড়া গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৪. জাম:
- জাম এবং এর বীজ মেহ রোগ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। জাম বীজের গুঁড়া খেলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
- ১ চামচ জাম বীজের গুঁড়া প্রতিদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৫. দারুচিনি:
- দারুচিনির মধ্যে এমন উপাদান রয়েছে যা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- এক চামচ দারুচিনি গুঁড়া এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খাওয়া যেতে পারে।
৬. অশ্বগন্ধা:
- অশ্বগন্ধা মেহ রোগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শরীরের ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।
- প্রতিদিন অশ্বগন্ধার গুঁড়া বা ট্যাবলেট খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৭. বেল পাতা:
- বেল পাতার রস মেহ রোগের জন্য উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বেল পাতার রস খেলে উপকার পাওয়া যায়।
জীবনযাপনে পরিবর্তন:
- পর্যাপ্ত ব্যায়াম: প্রতিদিন হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম করা উচিত, যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম বা সাইক্লিং।
- সুষম খাদ্য: কার্বোহাইড্রেট এবং শর্করা কমিয়ে প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত।
- মানসিক চাপ কমানো: ধ্যান ও শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত, যা শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
পরামর্শ:
মেহ রোগ একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। তাই প্রাকৃতিক চিকিৎসা অনুসরণের পাশাপাশি, নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রক্তে শর্করা নিয়মিত পরীক্ষা করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।