ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ হলো রক্তচাপের নিম্নতম মান, যা তখন দেখা যায় যখন হৃদপিণ্ড বিশ্রামে থাকে এবং রক্ত প্রবাহিত হয়। ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বেশি থাকলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে, যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং কিডনির সমস্যাসহ আরও অনেক কিছু। তাই ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। নিচে কিছু উপায় দেওয়া হলো, যা আপনাকে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ কমানোর উপায়
১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা
সঠিক খাদ্যাভ্যাস ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিচে কিছু খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দেওয়া হলো:
- কম লবণ খাওয়া: অতিরিক্ত লবণ ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বাড়াতে পারে। তাই লবণের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
- পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: কলা, কমলা, শাকসবজি এবং টমেটো পটাশিয়ামের ভালো উৎস, যা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
- ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার: শাকসবজি, ফলমূল এবং পুরো শস্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার: ফলিক অ্যাসিড ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ব্রকলি, পেঁপে এবং পালংশাকে ফলিক অ্যাসিড রয়েছে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
অতিরিক্ত ওজন ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বাড়াতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটতে পারেন।
৩. স্ট্রেস কমানো
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বাড়াতে পারে। স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রামও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৪. নিয়মিত ব্যায়াম করা
নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মৃদু থেকে মাঝারি শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন। হাঁটাচলা, জগিং, সাইকেলিং এবং সাঁতার রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
৫. ধূমপান এবং অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা
ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বাড়াতে পারে। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এগুলো থেকে বিরত থাকুন। ধূমপান ত্যাগ করা শুধুমাত্র রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে না, বরং শরীরের অন্যান্য অংশেরও স্বাস্থ্য ভাল রাখবে।
৬. প্রচুর পানি পান করা
শরীরে পানির অভাব থাকলে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বাড়তে পারে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। পানি শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৭. রিলাক্সেশন থেরাপি
ম্যাসাজ, আরোমাথেরাপি এবং মেডিটেশন রিলাক্সেশন থেরাপি হিসেবে কাজ করে, যা রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। নিয়মিত এই ধরনের থেরাপি গ্রহণ করলে মানসিক চাপ কমে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা সহজ হয়।
চিকিৎসা সেবা নেওয়া
যদি আপনার ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ নিয়মিতভাবে বেশি থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন এবং জীবনযাপনের পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে।
ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ কমানোর জন্য সঠিক জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্ট্রেস কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম করা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, এবং ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যদি রক্তচাপ বেশি থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
📌 ঠিকানা:
পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।