বুকে দুধ জমে গেলে করণীয়

বুকের দুধ জমে যাওয়া (Engorgement) মায়েদের জন্য একটি অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে যারা নতুন মা হয়েছেন। দুধ জমে গেলে বুক ফুলে যায়, ব্যথা হয় এবং শিশুকে দুধ খাওয়াতে সমস্যা হয়। এটি সাধারণত মায়ের শরীরে অতিরিক্ত দুধ উৎপন্ন হলে বা দুধ বের না হলে ঘটে। সময়মতো এর প্রতিকার করা না হলে সংক্রমণ বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বুকে দুধ জমার কারণ

১. দুধ বের না হওয়া:

শিশুকে সময়মতো বুকের দুধ খাওয়াতে না পারলে বা সঠিকভাবে দুধ বের না হলে, দুধ জমে বুক ফুলে ওঠে। অনেক সময় শিশুর সঠিক পজিশনে দুধ পান না করলে দুধ পুরোপুরি বের হতে পারে না।

2. অতিরিক্ত দুধ উৎপাদন:

কিছু মায়ের শরীরে খুব বেশি দুধ তৈরি হয়, যা শিশুর প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হতে পারে। এতে বুকের ভেতর দুধ জমে যেতে পারে এবং ফোলাভাব ও ব্যথা হতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

৩. বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা:

যদি মা হঠাৎ করে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেন, তবে বুকের দুধ জমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ধীরে ধীরে দুধ কমানো উচিত, যাতে দুধ জমে না থাকে।

বুকে দুধ জমে গেলে করণীয়

১. নিয়মিত দুধ খাওয়ানো:

শিশুকে প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়মিত দুধ খাওয়াতে হবে। সময়মতো দুধ খাওয়ালে দুধ জমার সম্ভাবনা কমে যায়। বিশেষ করে প্রতিবার খাওয়ানোর সময় একটি স্তন সম্পূর্ণ খালি করার চেষ্টা করতে হবে।

২. গরম সেঁক দেওয়া:

গরম সেঁক দিলে দুধ জমার সমস্যা কমতে পারে। একটি পরিষ্কার গরম কাপড় বা তাওয়ালে বুকের ওপর রাখলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং দুধ সহজে বের হতে সাহায্য করে।

৩. হাত দিয়ে বা পাম্প ব্যবহার করে দুধ বের করা:

শিশু যদি দুধ পুরোপুরি পান না করে, তাহলে হাত দিয়ে হালকাভাবে বা স্তন পাম্পের সাহায্যে অতিরিক্ত দুধ বের করে ফেলতে হবে। তবে অতিরিক্ত পাম্প করা ঠিক নয়, কারণ এতে দুধের উৎপাদন আরও বেড়ে যেতে পারে।

৪. ঠান্ডা সেঁক ব্যবহার করা:

গরম সেঁক ব্যবহারের পর ঠান্ডা সেঁকও করা যেতে পারে। এটি বুকের ফোলাভাব ও ব্যথা কমাতে সহায়ক। ঠান্ডা সেঁক দিলে দুধ জমে যাওয়া থেকে আরাম পাওয়া যায়।

৫. নরম ব্রা পরিধান করা:

নিয়মিত নরম ও আরামদায়ক ব্রা পরা উচিত, যা বুকে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে না। টাইট বা অস্বস্তিকর ব্রা পরলে দুধ জমে যাওয়ার সমস্যা আরও বাড়তে পারে।

৬. স্তনের ম্যাসাজ করা:

হালকাভাবে স্তনে ম্যাসাজ করলে দুধ সহজে বের হতে সাহায্য করে। গরম সেঁকের পর হালকা হাতে ম্যাসাজ করতে পারেন, যা জমে থাকা দুধ বের করতে সহায়ক।

৭. ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া:

যদি দুধ জমার কারণে অতিরিক্ত ব্যথা, ফোলাভাব বা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা যায়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।

গর্ভধারণের পর সঠিকভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো জরুরি

বুকের দুধ জমে যাওয়া প্রতিরোধে সঠিকভাবে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত দুধ খাওয়ানো এবং স্তনের সঠিক যত্ন নিলে এই সমস্যা অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top