হঠাৎ ঘাড়ে ব্যথা হলে করণীয়: দ্রুত আরাম পাওয়ার উপায়

হঠাৎ ঘাড়ে ব্যথা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপকে ব্যাহত করতে পারে। এটি প্রায়শই পেশী টান, অস্বস্তিকর ঘুমের ভঙ্গি, অতিরিক্ত চাপ, অথবা দীর্ঘ সময় ধরে ভুলভাবে বসে থাকার কারণে ঘটে থাকে। যদি ঘাড়ে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়, তবে তা আরও জটিল সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ প্রতিকার ঘাড়ের ব্যথা দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে।

হঠাৎ ঘাড়ে ব্যথার কারণ

১. পেশী টান: ঘাড়ের পেশীগুলিতে টান লাগলে ব্যথা হতে পারে। ২. অস্বস্তিকর ঘুমের ভঙ্গি: যদি রাতে ঘুমানোর সময় ঘাড় ভুল ভঙ্গিতে থাকে, তাহলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। ৩. অতিরিক্ত চাপ: স্ট্রেসের কারণে পেশীগুলো শক্ত হয়ে যেতে পারে, যা ঘাড়ে ব্যথার কারণ হতে পারে। ৪. কম্পিউটার বা মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার: দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করলে ঘাড়ের উপর চাপ পড়ে, যা ব্যথা সৃষ্টি করে। ৫. আঘাত: কোনো আঘাত বা দুর্ঘটনার কারণে ঘাড়ে ব্যথা শুরু হতে পারে।

raju akon youtube channel subscribtion

হঠাৎ ঘাড়ে ব্যথা হলে করণীয়

১. বিরতি নিন এবং বিশ্রাম করুন

ঘাড়ের ব্যথা শুরু হলে প্রথমে কাজ থেকে বিরতি নিন এবং ব্যথার স্থানে বিশ্রাম দিন। শুয়ে বিশ্রাম নেওয়া বা সোজা হয়ে বসে থাকার চেষ্টা করুন, যাতে ঘাড়ের উপর চাপ না পড়ে।

২. হট বা কোল্ড থেরাপি ব্যবহার করুন

  • হট থেরাপি: ঘাড়ের ব্যথার জন্য গরম সেঁক খুব উপকারী। গরম পানির ব্যাগ বা হট ওয়াটার বোতল ব্যবহার করে ঘাড়ে সেঁক দিতে পারেন। এটি পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে।
  • কোল্ড থেরাপি: যদি ঘাড়ের ব্যথা কোনো আঘাতের কারণে হয়, তবে ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন। বরফের ব্যাগ বা কাপড়ে বরফ মুড়ে ব্যথার স্থানে প্রয়োগ করলে আরাম পাওয়া যায়।

৩. হালকা স্ট্রেচিং ও ঘাড়ের ব্যায়াম করুন

  • ঘাড়ের পেশীগুলোকে ধীরে ধীরে স্ট্রেচ করতে পারেন। সামনে-পেছনে, ডানে-বামে ঘাড় ঘুরানোর হালকা ব্যায়াম করলে ব্যথা কমতে পারে। তবে ব্যায়াম করার সময় খুব সাবধান থাকতে হবে, যাতে ব্যথা আরও বেড়ে না যায়।

৪. সঠিক ভঙ্গিতে বসুন

  • কাজের সময় সঠিকভাবে বসে থাকুন। ঘাড় সোজা রেখে কাজ করুন এবং চেষ্টা করুন কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিন চোখের সমান উচ্চতায় রাখতে। দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকলে মাঝে মাঝে উঠে হাঁটাহাঁটি করে নিন।

৫. পেশী শিথিল করার ওষুধ ব্যবহার করুন

  • ওষুধ যেমন পেশী শিথিলকারী ব্যবহার করতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা উচিত। অনেক সময় ব্যথানাশক ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করেও আরাম পাওয়া যায়।

৬. স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন ও রিলাক্সেশন

  • স্ট্রেস থেকে ঘাড়ের ব্যথা হলে মেডিটেশন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। এতে মস্তিষ্ক এবং শরীর উভয়ই শান্ত হয় এবং পেশীগুলোর চাপ কমে যায়।

৭. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

  • যদি ঘাড়ের ব্যথা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয় বা যদি ব্যথা খুব বেশি হয়, তবে অবিলম্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তারা এক্স-রে বা এমআরআই করার পরামর্শ দিতে পারেন এবং সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করবেন।

হঠাৎ ঘাড়ে ব্যথা হলে দুশ্চিন্তা না করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। উপযুক্ত বিশ্রাম, হট বা কোল্ড থেরাপি, হালকা স্ট্রেচিং এবং সঠিক ভঙ্গিতে বসার মাধ্যমে ঘাড়ের ব্যথা দূর করা যায়। তবে, দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর ব্যথার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top