বাচ্চাদের হঠাৎ বমি হলে করণীয়

বাচ্চাদের হঠাৎ বমি হলে অনেক মা-বাবাই দুশ্চিন্তায় পড়েন। সাধারণত বাচ্চাদের বমি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন—পেটের ইনফেকশন, অতিরিক্ত খাওয়া, গ্যাসট্রিক সমস্যা বা খাদ্যে অ্যালার্জি। তবে হঠাৎ বমি হলে তা দ্রুত সমাধান করা জরুরি, কারণ দীর্ঘ সময় ধরে বমি হলে বাচ্চার শরীরের পানির পরিমাণ কমে যেতে পারে এবং ডিহাইড্রেশনের শিকার হতে পারে। তাই বমির মূল কারণ চিহ্নিত করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। নিচে বাচ্চাদের হঠাৎ বমি হলে কী করণীয় তা উল্লেখ করা হলো:

বাচ্চাদের হঠাৎ বমি হলে করণীয়

১. বাচ্চাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন

বাচ্চার শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে, তাই বমি হলে তাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে দিন। বিশ্রাম বাচ্চার শরীরকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবে।

raju akon youtube channel subscribtion

২. পর্যাপ্ত পানি বা তরল দিন

বমির পর বাচ্চার শরীরে তরলের অভাব হতে পারে, যা ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে। তাই বমির পর বাচ্চাকে অল্প অল্প করে স্যালাইন, পানি, বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় দিন। তবে একবারে বেশি পানি দেবেন না, এতে পুনরায় বমি হতে পারে।

৩. হালকা খাবার খাওয়ান

বমির পর বাচ্চাকে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার দিতে হবে, যেমন—ভাতের মাড়, পাউরুটি, দই, কলা বা নরম খিচুড়ি। এ সময় ভারী বা তেলে ভাজা খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এসব খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

৪. মাঝে মাঝে বমি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

যদি বাচ্চার বারবার বমি হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এটি গুরুতর কোনো সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে, যেমন—পেটের ইনফেকশন বা ফুড পয়জনিং। চিকিৎসক বাচ্চার বমির কারণ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।

৫. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন

বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে অথবা জ্বর হলে তা বমির কারণ হতে পারে। তাই বাচ্চার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে জ্বর কমানোর ওষুধ দিতে পারেন।

৬. বমির কারণ চিহ্নিত করুন

বাচ্চার বমি ঠিক কেন হচ্ছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। কোনো নতুন খাবার খেয়েছে কিনা, বা বাচ্চার পেটে ইনফেকশন হয়েছে কিনা, তা যাচাই করা প্রয়োজন। কারণ চিহ্নিত করা গেলে সঠিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।

৭. তাড়াহুড়ো করবেন না

বমির পর বাচ্চাকে তাড়াহুড়ো করে খাবার বা পানি দেবেন না। বমি হওয়ার পর কিছুটা সময় দিন, যাতে তার শরীর শান্ত হয়। এরপরই অল্প অল্প করে তরল দিন এবং পর্যায়ক্রমে খাবার খাওয়াতে শুরু করুন।

৮. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখুন

বাচ্চার আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাচ্চার খেলনা বা অন্যান্য জিনিস পরিষ্কার রাখতে হবে যাতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।

সতর্কতা:

  • যদি বাচ্চার বমির সঙ্গে জ্বর, পাতলা পায়খানা, বা অন্য কোনো গুরুতর লক্ষণ থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • যদি বাচ্চা বমির পর খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চোখ-মুখ শুকিয়ে যায়, তবে এটি ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ হতে পারে। দ্রুত স্যালাইন দিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বাচ্চাদের হঠাৎ বমি হলে দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। বমির পর বাচ্চার শরীরে পানির অভাব পূরণ করতে হবে এবং সহজপাচ্য খাবার দিতে হবে। তবে যদি বাচ্চার অবস্থা খারাপ হয় বা বারবার বমি হয়, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top