গর্ভাবস্থায় দুধ খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় সুস্থ ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময় মা এবং শিশুর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি। দুধ হলো এমন একটি খাবার, যা গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি এবং মায়ের শরীরকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় দুধ খাওয়ার উপকারিতা

১. ক্যালসিয়ামের উৎস

গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে এবং শিশুর হাড়ের গঠন ও শক্তির জন্য পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। দুধ ক্যালসিয়ামের একটি বড় উৎস, যা গর্ভের শিশুর হাড়, দাঁত এবং অন্যান্য অঙ্গের গঠনে সাহায্য করে। মায়ের শরীরের হাড়ও এই সময়ে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে শক্তিশালী হয়।

raju akon youtube channel subscribtion

২. প্রোটিনের প্রাচুর্য

দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা গর্ভাবস্থায় শিশুর টিস্যু, কোষ, এবং অঙ্গের বৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়ক। প্রোটিনের সঠিক পরিমাণ নিশ্চিত হলে গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়।

৩. ভিটামিন ডি

দুধে থাকা ভিটামিন ডি গর্ভাবস্থায় হাড়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে এবং মা ও শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

৪. ফোলেট (ফলিক এসিড)

গর্ভাবস্থায় ফোলেট গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুর সঠিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুধে কিছুটা ফোলেটও থাকে, যা গর্ভাবস্থায় শিশুর জন্য উপকারী হতে পারে।

৫. হাইড্রেশন

গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করা জরুরি, কারণ এটি শরীরের সঠিক জলবন্টন এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। দুধ পান করলে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ হয় এবং শরীরের হাইড্রেশন বজায় থাকে।

৬. হজমের উন্নতি

গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই হজমজনিত সমস্যায় ভুগতে হয়। দুধে থাকা প্রোবায়োটিক উপাদান হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে পারে এবং গ্যাস বা অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাগুলো কমিয়ে হজমের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

৭. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

দুধে থাকা পুষ্টি এবং প্রোটিন মায়ের শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি যোগান দেয়, যা সঠিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কতটুকু দুধ খাওয়া উচিত?

প্রতিদিন গর্ভাবস্থায় অন্তত ২-৩ গ্লাস দুধ খাওয়া উচিত। তবে মায়ের শরীরের অবস্থা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দুধের পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।

দুধ খাওয়ার সময় সতর্কতা

  • ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স: যদি মায়ের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে, তাহলে দুধ খাওয়ার সময় অস্বস্তি হতে পারে। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিকল্প খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
  • ফ্যাটযুক্ত দুধ: যদি ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে, তাহলে ফুল ক্রিম দুধের পরিবর্তে লো-ফ্যাট দুধ বা স্কিমড মিল্ক গ্রহণ করা ভালো।

গর্ভাবস্থায় দুধ খাওয়া মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য পুষ্টি গর্ভের শিশুর সঠিক বিকাশে সাহায্য করে এবং মায়ের শরীরকে শক্তিশালী রাখে। তবে সঠিক পরিমাণে দুধ গ্রহণ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা জরুরি।

📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top