কাজটা সঠিকভাবে করতে পারব কিনা ভেবে নার্ভাস হওয়া: কারণ ও সমাধান

নতুন কোনো কাজ হাতে নিলে বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্ব পেলে অনেকে নার্ভাস হয়ে পড়েন। এই ভয়ের পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে, যেমন নিজেকে নিয়ে সন্দেহ, চাপ, কিংবা ব্যর্থতার আশঙ্কা। তবে নার্ভাস হওয়া খুবই সাধারণ একটি অনুভূতি, এবং এটি মোকাবেলা করা সম্ভব।


কেন কাজের আগে নার্ভাসনেস হয়?

কাজের আগে নার্ভাস হওয়ার পেছনে কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে:

  1. পারফেকশনিজম: যারা সবকিছু নিখুঁতভাবে করতে চান, তারা প্রায়ই কাজের মান নিয়ে চিন্তিত থাকেন। যদি মনে হয় কাজটি যথাযথভাবে করা যাচ্ছে না, তবে নার্ভাসনেস তৈরি হয়।
  2. ব্যর্থতার আশঙ্কা: কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন না করতে পারার ভয় আমাদের মাঝে নার্ভাসনেস তৈরি করে। ভবিষ্যতে কী ঘটবে তা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করে মন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।
  3. অভিজ্ঞতার অভাব: নতুন কাজ বা পরিস্থিতির জন্য অভিজ্ঞতার অভাব থাকলে তা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে। আমরা তখন ভাবতে শুরু করি, “আমি কি পারব?”
  4. অতিরিক্ত চাপ: কাজটি সময়মতো বা নির্দিষ্ট মান অনুযায়ী সম্পন্ন করতে পারব কিনা, সেই চাপ থেকেও নার্ভাসনেস তৈরি হয়।

raju akon youtube channel subscribtion

কাজের সময় নার্ভাসনেস কমানোর উপায়

  1. পরিকল্পনা করুন: কাজের আগে একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা তৈরি করলে মন শান্ত থাকে। কাজের প্রক্রিয়া, সময়সূচী এবং প্রতিটি পদক্ষেপ কীভাবে সম্পন্ন হবে তা পরিকল্পিত থাকলে নার্ভাসনেস কমে যায়।
  2. ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করুন: বড় কাজগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন এবং একে একে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন। এতে করে কাজটি এত বড় মনে হবে না এবং নার্ভাসনেসও কমবে।
  3. ইতিবাচক চিন্তা করুন: কাজটি আপনি করতে পারবেন এই বিশ্বাস নিয়ে কাজ শুরু করুন। নেতিবাচক চিন্তা দূরে রাখার চেষ্টা করুন এবং নিজেকে বলুন, “আমি পারব।”
  4. প্রস্তুতি নিন: কাজ শুরু করার আগে যতটুকু সম্ভব প্রস্তুতি নিন। কাজের সকল প্রয়োজনীয় তথ্য, উপকরণ এবং সরঞ্জাম হাতের কাছে রাখুন। প্রস্তুতি ভালো থাকলে আত্মবিশ্বাসও বাড়ে।
  5. মেডিটেশন ও শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ: কাজের আগে কয়েক মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। ধীরে ধীরে শ্বাস নেয়া ও ছাড়া নার্ভাসনেস কমাতে সাহায্য করে। মেডিটেশন বা মাইন্ডফুলনেস প্র্যাকটিস করলেও মন শান্ত থাকে।
  6. নিজেকে সময় দিন: কাজে দ্রুত সফল হওয়ার চিন্তা করলে নার্ভাসনেস বেড়ে যেতে পারে। নিজেকে সময় দিন এবং ধৈর্য ধরে কাজ করুন। ভুল করা স্বাভাবিক, এবং প্রতিটি ভুল থেকেই শেখার সুযোগ আছে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রয়োজন হতে পারে কখন?

যদি নার্ভাসনেস এত বেশি হয় যে আপনি কাজ করতে পারছেন না বা আপনার পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তাহলে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া উচিত। কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি (CBT) এবং অন্যান্য থেরাপি নার্ভাসনেস কমাতে সাহায্য করতে পারে।


উপসংহার

কোনো কাজের আগে নার্ভাস হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার, তবে এটি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় হয়, তাহলে তা প্রতিরোধ করা জরুরি। কাজের সময় প্রস্তুতি নেওয়া, ইতিবাচক মনোভাব রাখা এবং ধৈর্য ধরে কাজ করা আপনাকে নার্ভাসনেস থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। মনে রাখবেন, প্রতিটি কাজের সাথে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং নার্ভাসনেস ধীরে ধীরে কমে যাবে।


ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।
ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top