স্কুলে যেতে যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে: সুরক্ষিত থাকার করণীয় পদক্ষেপ

বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে যাওয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলে বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে আসা, শারীরিক কার্যক্রম এবং পরিবেশগত কারণে সহজেই সংক্রমণ হতে পারে। তাই নিজেদের এবং অন্যদের সুরক্ষার জন্য কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অপরিহার্য।

স্কুলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে কেন?

স্কুলে অনেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক একসাথে মেলামেশা করেন। তাই যেকোনো ভাইরাস বা রোগ সহজেই এক জন থেকে অন্য জনের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে রোগ প্রতিরোধে এবং সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি।

raju akon youtube channel subscribtion

স্কুলে যেতে যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে:

১. মাস্ক পরুন:

স্কুলে যাওয়ার সময় এবং ক্লাসে বসে মাস্ক পরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাস্ক পরলে মুখ, নাক, এবং শ্বাসতন্ত্রে জীবাণু বা ভাইরাস প্রবেশ করার সম্ভাবনা কমে যায়। বিশেষ করে যেসব স্কুলে জনসমাগম বেশি হয়, সেখানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।

২. নিয়মিত হাত ধুয়ে নিন:

হাত পরিষ্কার রাখা স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রথম পদক্ষেপ। স্কুলে যাওয়ার সময়, স্কুলের মধ্যে এবং বাইরে আসা-যাওয়ার সময় সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুয়ে নিন। পানির ব্যবস্থা না থাকলে অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

৩. নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি ও কাশি দিন:

হাঁচি বা কাশি হলে নাক-মুখ টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢেকে নিন। এরপর দ্রুত হাতে জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন অথবা হাত ধুয়ে নিন, যাতে ভাইরাস বা জীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি কমে।

৪. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন:

ক্লাসে বসার সময় এবং বাইরে খেলাধুলা করার সময় অন্যদের থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন। স্কুলে বন্ধুদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে না বসে একটু দূরে থেকে কথা বলুন, যাতে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা কম থাকে।

৫. নিজস্ব জিনিসপত্র ব্যবহার করুন:

নিজের পানির বোতল, কলম, নোটবুক ইত্যাদি নিজস্ব সামগ্রী ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। অন্যদের সাথে এই জিনিসগুলো বিনিময় না করাই ভালো, কারণ সেগুলোর মাধ্যমে সহজেই জীবাণু ছড়াতে পারে।

৬. শরীরে কোনো উপসর্গ থাকলে স্কুলে যাবেন না:

জ্বর, সর্দি, কাশি, বা শরীর খারাপ হলে স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে বিশ্রাম নিন। স্কুলে যাওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার কোনো উপসর্গ নেই। যদি কারো মধ্যে কোভিড-১৯ বা অন্য কোনো সংক্রামক রোগের লক্ষণ থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং স্কুলে না যান।

৭. সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন:

স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন, যাতে শরীর শক্তি পায় এবং রোগের সাথে লড়াই করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাজা ফল, শাকসবজি, এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৮. বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন:

স্কুলের বাইরে বা রাস্তার ধারের খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। বাইরে বিক্রি হওয়া খাবার স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে এবং সেগুলো থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই বাড়ি থেকে পরিষ্কার খাবার নিয়ে যান।

৯. পর্যাপ্ত পানি পান করুন:

শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজের পানির বোতল সবসময় সঙ্গে রাখুন এবং তা থেকে পানি পান করুন। অন্যদের সাথে পানির বোতল বিনিময় না করার চেষ্টা করুন।

১০. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান:

শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং প্রয়োজনীয় টিকা গ্রহণ করুন।

স্কুল থেকে ফিরে করণীয়:

স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পরও কিছু স্বাস্থ্যবিধি মানা উচিত:

  • বাড়ি ফিরে হাত-পা ধুয়ে ফেলুন
  • ব্যবহৃত কাপড় ধুয়ে ফেলুন এবং নিজের ব্যবহার্য সামগ্রী পরিষ্কার রাখুন।
  • স্কুল থেকে আনা জিনিসপত্র জীবাণুমুক্ত করুন

উপসংহার:

শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা শুধু তাদের নিজের জন্য নয়, বরং সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা স্কুলে সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। সুস্থ থাকতে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং শিক্ষার্থীদেরও এই বিষয়ে সচেতন করুন।

ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।
ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top