টক দই (Yogurt) আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি শুধু মজাদার নয়, স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকেও অতুলনীয়। টক দই প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, প্রোবায়োটিক এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজের একটি চমৎকার উৎস। এর নিয়মিত সেবন আমাদের শরীরের জন্য নানা ধরনের উপকার বয়ে আনে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক টক দই খাওয়ার কিছু আশ্চর্যজনক উপকারিতা।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
টক দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক বা উপকারী ব্যাকটেরিয়া আমাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে সহায়ক।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ টক দই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীরের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং বিভিন্ন ভাইরাল ইনফেকশনের ঝুঁকি কমায়।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
টক দইতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন এবং কম ক্যালরি, যা ক্ষুধা কমায় এবং পেট ভরা রাখে দীর্ঘ সময় ধরে। এতে থাকা প্রোবায়োটিক চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।
৪. হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা
টক দই নিয়মিত খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখে।
৫. হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
টক দই ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ, যা হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। এটি হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য টক দই অত্যন্ত উপকারী।
৬. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
টক দইয়ের ভিটামিন বি এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের কোষ পুনর্গঠন করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ কমায়। নিয়মিত টক দই খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল থাকে।
৭. মানসিক চাপ কমায়
টক দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক উপাদান মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক এবং মানসিক চাপ, উদ্বেগ কমাতে কার্যকর। এটি মস্তিষ্কে সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণ বাড়ায়, যা মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৮. মূত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধ
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ টক দই মূত্রাশয়ের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থেকে মূত্রাশয়কে রক্ষা করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
৯. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
টক দইয়ের পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দেয়, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়।
১০. পেটের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
টক দইয়ে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- ডায়রিয়া, ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS) এবং আলসার প্রতিরোধে কার্যকর।
উপসংহার
টক দই একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান, যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। নিয়মিত টক দই খাওয়া হজমশক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় টক দই অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না।
ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।
ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.