বিশেষ শিশুদের জন্য পুষ্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুধ এমন একটি খাবার যা প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, এবং ভিটামিন-ডি সরবরাহ করে, যা হাড়, দাঁত এবং পেশি বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। তবে বিশেষ কিছু শিশুদের ক্ষেত্রে, বিশেষত যারা অটিজম, এডিএইচডি, সেরিব্রাল পালসি বা ফুড এলার্জি সমস্যায় ভোগে, তাদের জন্য দুধ খাওয়া ঠিক না-ও হতে পারে।
দুধ খাওয়ার সুবিধা
- পুষ্টি সরবরাহ: দুধ ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, এবং ভিটামিন-ডি-এর একটি দুর্দান্ত উৎস, যা হাড় শক্তিশালী করতে এবং শারীরিক বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: সঠিক পরিমাণে দুধ খেলে বিশেষ শিশুদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
- এনার্জি বৃদ্ধি: দুধ শিশুর দৈনন্দিন কাজগুলোতে শক্তি জোগাতে সহায়ক।
দুধ খাওয়ার অসুবিধা
- দুগ্ধজাত অ্যালার্জি: কিছু শিশুর ক্ষেত্রে দুধে থাকা ল্যাকটোজ বা কেসিন প্রোটিনের জন্য অ্যালার্জি হতে পারে, যা পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।
- অটিজমের ক্ষেত্রে প্রভাব: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, অটিজম আক্রান্ত শিশুরা দুধ খেলে তাদের সংবেদনশীলতা বেড়ে যেতে পারে। গ্লুটেন এবং কেসিন প্রোটিন অনেক সময় অটিজম আক্রান্ত শিশুদের আচরণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
- পেটের সমস্যা: দুধের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকার কারণে অনেক শিশু দুধ হজম করতে পারে না। এটি পেট ব্যথা, ডায়রিয়া বা অন্যান্য গ্যাস্ট্রিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
কেসিন-ফ্রি ডায়েট এবং বিশেষ শিশু
অটিজম বা সেন্সরি প্রসেসিং ডিসঅর্ডার (SPD) আক্রান্ত শিশুদের জন্য অনেক সময় কেসিন-ফ্রি ডায়েট প্রস্তাবিত হয়। এতে দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যের ব্যবহার এড়িয়ে চলে অন্যান্য বিকল্প খাবারের মাধ্যমে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করা হয়।
বিকল্প খাবার
যদি আপনার শিশু দুধ খেতে না পারে তবে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন:
- সোয়া দুধ: এটি প্রোটিনের চমৎকার উৎস এবং ল্যাকটোজ-মুক্ত।
- বাদামের দুধ: আমন্ড বা কেশু বাদামের দুধ শিশুদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
- চালের দুধ: এটি হালকা এবং সহজে হজমযোগ্য।
- ওটস দুধ: এটি পুষ্টিকর এবং ভিটামিন ও মিনারেলে সমৃদ্ধ একটি বিকল্প।
উপসংহার
বিশেষ শিশুদের জন্য দুধ খাওয়া উচিত কি না তা নির্ভর করে শিশুর শারীরিক অবস্থার উপর। আপনার শিশুর যদি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, দুগ্ধজাত অ্যালার্জি, বা অটিজম থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ পরিস্থিতিতে কেসিন-ফ্রি বা ল্যাকটোজ-ফ্রি ডায়েটের মাধ্যমে শিশুর স্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব।