অটিজম কি?
অটিজম একটি মানসিক বিকাশগত সমস্যা, যা শিশুর সামাজিক যোগাযোগ, আচরণ, এবং শেখার ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। অটিজম বিভিন্ন রকম উপসর্গের মাধ্যমে দেখা যায়, যেগুলো ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। এটি সাধারণত শিশুদের মধ্যে প্রাথমিক জীবনের প্রথম তিন বছরের মধ্যে লক্ষণীয় হয়।
অটিজমের লক্ষণসমূহ:
- সামাজিক মেলামেশায় সমস্যা: সামাজিক যোগাযোগ এবং সম্পর্ক গঠনে জটিলতা।
- বারবার একই ধরনের আচরণ: একই কাজ বা শব্দ বারবার পুনরাবৃত্তি করা।
- অনুভূতিজনিত অস্বাভাবিকতা: আলো, শব্দ, স্পর্শের প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা।
- সীমিত আগ্রহ: কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা বস্তুতে অতিরিক্ত আগ্রহ।
অটিজমের কারণ:
অটিজমের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই, তবে এটি জিনগত এবং পরিবেশগত কারণে হতে পারে। গর্ভাবস্থায় মায়ের স্বাস্থ্য, সন্তান প্রসবের সময়জনিত জটিলতা, এবং অন্যান্য পরিবেশগত প্রভাব এটির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
অটিজম নির্ণয়:
অটিজম নির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বাচ্চার বিকাশমূলক পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসা ও থেরাপির মাধ্যমে উন্নতি করা সম্ভব।
অটিজমের চিকিৎসা ও সহায়তা:
অটিজমের নিরাময় নেই, তবে সঠিক থেরাপি এবং সহায়তায় বাচ্চারা স্বাভাবিক জীবনে এগিয়ে যেতে পারে। যেমন:
- আচরণগত থেরাপি (ABA): বাচ্চাদের সামাজিক ও যোগাযোগমূলক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
- স্পিচ থেরাপি: ভাষা ও কথোপকথন শেখানো।
- অকুপেশনাল থেরাপি: সেন্সরি সমস্যা ও মোটর স্কিল উন্নত করার পদ্ধতি।
- শিক্ষাগত সহায়তা: বাচ্চার শিক্ষা এবং শেখার প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষায়িত শিক্ষা প্রোগ্রাম।
বাংলাদেশে অটিজম:
বাংলাদেশে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে এখনও উন্নত চিকিৎসা ও সেবা প্রদানের জন্য আরও উদ্যোগ প্রয়োজন। সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য থেরাপি, শিক্ষা, এবং পরিবারের জন্য পরামর্শমূলক সেবা প্রদান করে চলেছে।