মাল্টিভিটামিনের বড়ি নয়, খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার

বর্তমান সময়ে ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে অনেকেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণের জন্য মাল্টিভিটামিনের বড়ির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। তবে প্রকৃতপক্ষে, মাল্টিভিটামিনের বড়ি নয়, সঠিক পুষ্টি পেতে আমাদের খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর ও প্রাকৃতিক খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে আমরা প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সহজেই পেতে পারি যা শরীরের সঠিক বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক।

মাল্টিভিটামিনের বড়ির কিছু সীমাবদ্ধতা

মাল্টিভিটামিনের বড়িগুলো দ্রুত এবং সহজ সমাধান হিসেবে জনপ্রিয় হলেও এতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

১. প্রাকৃতিক নয়

মাল্টিভিটামিনের বড়ি প্রাকৃতিক উৎস থেকে তৈরি নয় এবং প্রাকৃতিক খাবার থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন ও খনিজগুলোর মতো প্রক্রিয়াজাত নয়। ফলে শরীর এগুলো সহজে গ্রহণ করতে পারে না।

raju akon youtube channel subscribtion

২. অপূর্ণ পুষ্টি

একটি বড়িতে যত ভিটামিন ও খনিজই থাকুক না কেন, সেগুলো থেকে আমরা সম্পূর্ণ পুষ্টি পেতে পারি না। খাবার থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন ও খনিজগুলি প্রাকৃতিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ এবং শরীর সহজে সেগুলোকে শোষণ করতে সক্ষম হয়।

৩. দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব

মাল্টিভিটামিন বড়ি দীর্ঘ সময় ধরে সেবন করা হলে তা শরীরে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। ভিটামিনের অতিরিক্ত মাত্রা শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে, যেমন মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, হাড়ের দুর্বলতা ইত্যাদি।

স্বাস্থ্যকর খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ও খনিজ গ্রহণের উপকারিতা

১. পুষ্টিতে ভরপুর

প্রাকৃতিক খাবার থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার পেতে পারি, যা আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।

২. সহজ শোষণ

স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন এবং খনিজগুলো শরীর সহজেই শোষণ করতে পারে। ফলে আমাদের শরীর এসব উপাদান থেকে সম্পূর্ণ পুষ্টি গ্রহণ করতে সক্ষম হয়।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন শাকসবজি, ফলমূল, দানাশস্য, মাছ ও মাংস থেকে প্রাপ্ত পুষ্টি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ এবং দীর্ঘমেয়াদী রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।

৪. প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট

প্রাকৃতিক খাবার যেমন ফলমূল ও শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা শরীরের কোষগুলোকে ফ্রি র‍্যাডিকেলস থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ক্যান্সার, হৃদরোগসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

৫. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি

ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। মাছ, বাদাম, বীজ ও সবুজ শাকসবজি এই উপাদানগুলোর ভালো উৎস।

স্বাস্থ্যকর খাবারের কিছু উদাহরণ

  • সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, ব্রকলি, পুঁইশাক, কপি
  • ফলমূল: আম, কলা, আপেল, কমলা, বেদানা, স্ট্রবেরি
  • দানাশস্য: ওটস, ব্রাউন রাইস, যব, গম
  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: ডাল, ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, বাদাম
  • ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, দানাশস্য

উপসংহার

মাল্টিভিটামিনের বড়ি কেবলই একটি সহায়ক উপাদান হতে পারে, কিন্তু আমাদের খাদ্যতালিকা থেকে সরাসরি প্রাকৃতিক উপায়ে পুষ্টি গ্রহণ করা সবচেয়ে ভালো। স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্য শরীরের জন্য উপযুক্ত পুষ্টি সরবরাহ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব।

ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬। ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top