চিয়া সিড, যা চিয়ার বীজ নামেও পরিচিত, একটি ক্ষুদ্র অথচ পুষ্টিতে ভরপুর বীজ। প্রাচীন মায়া এবং অ্যাজটেক সভ্যতায় এর ব্যবহার ছিল অনেক। বর্তমান বিশ্বে এটি একটি সুপারফুড হিসেবে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ, এর সহজ ব্যবহারের বৈশিষ্ট্য এবং অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য এটি খাদ্য তালিকায় একটি মূল্যবান উপাদান হয়ে উঠেছে।
চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
চিয়া সিডে রয়েছে ভরপুর পুষ্টি উপাদান যা আমাদের দৈনন্দিন শরীরের চাহিদা পূরণ করে। এক টেবিল চামচ চিয়া সিডে নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান রয়েছে:
- প্রোটিন: চিয়া সিডের উচ্চ প্রোটিনের পরিমাণ এটিকে শরীর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সহায়তা করে।
- ফাইবার: প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: এটি হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- ভিটামিন এবং খনিজ: চিয়া সিডে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক ও ভিটামিন বি যা হাড়ের গঠন শক্তিশালী করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
চিয়া সিডের স্বাস্থ্য উপকারিতা
১. হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক
চিয়া সিডে উপস্থিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সহায়ক।
২. ওজন কমাতে সাহায্য করে
চিয়া সিডে প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। ফলে ওজন কমানোর জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়াও এর ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করে।
৩. রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ
চিয়া সিড গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৪. হাড় ও দাঁতের সুরক্ষা
চিয়া সিডে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে যা হাড় এবং দাঁতের সুরক্ষায় অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে যারা দুগ্ধজাত খাবার খান না, তাদের জন্য চিয়া সিড ক্যালসিয়ামের একটি চমৎকার উৎস।
৫. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
চিয়া সিডে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা ফ্রি র্যাডিকেলস থেকে কোষকে সুরক্ষা প্রদান করে এবং বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
চিয়া সিড ব্যবহারের সহজ উপায়
চিয়া সিড খুবই সহজে বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা যায়। এটি সালাদ, স্মুদি, জুস, ওটমিল, দই, এবং বিভিন্ন বেকিং খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। চিয়া সিডের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি পানিতে ভিজিয়ে রাখলে একটি জেলি জাতীয় গঠন তৈরি করে, যা পুষ্টিগুণ বজায় রেখে শরীরের জন্য উপকারী হয়।
উপসংহার
চিয়া সিড পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অসীম। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড যুক্ত করলে তা শরীরের সার্বিক সুস্থতায় সহায়ক হতে পারে। বিশেষ করে হৃদযন্ত্র, হাড়ের গঠন, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চিয়া সিড অতুলনীয়।
ঠিকানা: পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬। ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬.