কালো বমি হওয়ার কারণ

কালো বমি হওয়া সাধারণত একটি বিপজ্জনক লক্ষণ, যা শরীরে কোনো গুরুতর সমস্যা নির্দেশ করতে পারে। এটি মূলত হেমাটেমেসিস (রক্ত বমি) নামে পরিচিত, যেখানে বমির রঙ কালো বা গাঢ় হয়, কারণ বমির সাথে রক্ত মিশে থাকে। নিম্নলিখিত কারণগুলো থেকে কালো বমি হতে পারে:

১. পাকস্থলীর আলসার:

পাকস্থলীর আলসার বা গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে রক্তপাত হতে পারে, যা পাকস্থলীর ভিতরে থাকা অ্যাসিডের সাথে মিশে কালো বমির সৃষ্টি করতে পারে।

২. খাদ্যনালীতে রক্তপাত:

খাদ্যনালীতে আঘাত বা ক্ষত হলে তা থেকে রক্তপাত হতে পারে। এই রক্ত পাকস্থলীতে পৌঁছে কালো বমি হিসেবে বের হয়।

৩. লিভারের সমস্যা:

লিভারের বিভিন্ন রোগ যেমন সিরোসিস বা লিভারের কোনো সংক্রমণ থাকলে পোর্টাল হাইপারটেনশন হতে পারে, যা খাদ্যনালীতে রক্তক্ষরণ ঘটায় এবং বমির সাথে কালো রক্ত বের হয়।

৪. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

যেসব ওষুধ পাকস্থলীর ক্ষত সৃষ্টি করে, যেমন নন-স্টেরয়েডাল এন্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (NSAIDs), এগুলো দীর্ঘদিন ধরে সেবন করলে পাকস্থলীতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি থাকে, যা কালো বমির কারণ হতে পারে।

৫. ক্যান্সার:

পাকস্থলী, খাদ্যনালী, বা অন্ত্রের ক্যান্সার থেকেও রক্তক্ষরণ হতে পারে, যা কালো বমি হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে।

৬. অ্যালকোহলের প্রভাব:

অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ পাকস্থলীতে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে, যা থেকে রক্তক্ষরণ হয় এবং কালো বমি হতে পারে।

করণীয়:

  • কালো বমি হলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
  • গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো।
  • প্রয়োজন হলে এন্ডোস্কোপি করা হতে পারে, যা পাকস্থলীর ভিতরের ক্ষত বা সমস্যা শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
  • রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া।

উপসংহার: কালো বমি হওয়া শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের সংকেত দিতে পারে, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাত্ক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। তাই এটি কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top