৫ মাসের শিশুর কাশি হলে করণীয়: নিরাপদ যত্ন ও চিকিৎসা

৫ মাসের শিশুদের ক্ষেত্রে কাশি সাধারণত তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতার দুর্বলতার কারণে দেখা দেয়। যদিও শিশুদের ক্ষেত্রে কাশি কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ না হতে পারে, তবুও দীর্ঘস্থায়ী কাশি কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে ডাক্তারি পরামর্শ প্রয়োজন। ৫ মাস বয়সী শিশুর জন্য কাশির চিকিৎসায় কিছু বাড়তি সাবধানতা এবং ঘরোয়া প্রতিকার অনুসরণ করতে হবে, যাতে শিশুর স্বাস্থ্য দ্রুত পুনরুদ্ধার হয়।

শিশুর কাশি হলে করণীয় পদক্ষেপসমূহ:

১. পর্যাপ্ত তরল প্রদান

শিশুর শরীরে পানির অভাব থাকলে কাশি বাড়তে পারে। তাই শিশুকে পর্যাপ্ত বুকের দুধ অথবা ফর্মুলা দুধ দিতে হবে। বুকের দুধে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডি, যা শিশুর শরীরে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

raju akon youtube channel subscribtion

২. শিশুকে গরম পানির ভাপ দেওয়া

শিশুর বুকে কফ জমে গেলে বা শ্বাসকষ্ট হলে গরম পানির ভাপ দেওয়া যেতে পারে। এটি শিশুর শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে এবং কাশি কমাবে। তবে ভাপ দেওয়ার সময় অতিরিক্ত তাপমাত্রা যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৩. শীতল ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এড়িয়ে চলা

শীতল বা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে শিশুর কাশি বাড়তে পারে। তাই শিশুকে সবসময় উষ্ণ পরিবেশে রাখতে হবে এবং শীতল হাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। শিশুর ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে ঘরের বাতাস আর্দ্র থাকে এবং শুষ্কতা না হয়।

৪. শিশুর মাথা উঁচু করে ঘুমানো

শিশুকে কাশি হলে শোয়ার সময় তার মাথা কিছুটা উঁচু করে রাখতে হবে। এর ফলে শ্বাস নিতে সুবিধা হবে এবং কাশির সমস্যা কমবে। আপনি একটি পাতলা তোষক বা বালিশ দিয়ে শিশুর মাথা সামান্য উঁচু রাখতে পারেন।

৫. ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ

শিশুদের ক্ষেত্রে কাশির কারণ বিভিন্ন হতে পারে, যেমন ঠান্ডা লাগা, অ্যালার্জি, ভাইরাসজনিত সংক্রমণ বা শ্বাসতন্ত্রের কোনো সমস্যা। তাই শিশুর কাশি ২-৩ দিনের বেশি স্থায়ী হলে অথবা কাশির সাথে জ্বর বা শ্বাসকষ্ট থাকলে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৬. শিশুকে ধূমপান থেকে দূরে রাখা

শিশুর আশেপাশে যদি কেউ ধূমপান করে, তবে তার কারণে শিশুর শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং কাশি বাড়তে পারে। তাই শিশুকে ধূমপানমুক্ত পরিবেশে রাখা খুবই জরুরি।

৭. ঠান্ডা থেকে সুরক্ষিত রাখা

শিশুর কাশি হলে তাকে ঠান্ডা বাতাস, ঠান্ডা পানি বা ঠান্ডা খাবার থেকে দূরে রাখতে হবে। গরম কাপড় পরিয়ে শিশুকে উষ্ণ রাখতে হবে এবং সবসময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।

শিশুর কাশি কমাতে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি:

  • মধু এবং আদার রস: যদিও ১ বছরের নিচের শিশুদের মধু খাওয়া নিষেধ, তবে আদার রস কিছুটা গরম করে বুকের অংশে মালিশ করতে পারেন। এটি শিশুর কাশির সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • লবণ পানির গার্গল: শিশুর জন্য লবণ পানির গার্গল সম্ভব না হলেও, এটি শিশুর আশেপাশের বড়দের করানো যেতে পারে। এটি শ্বাসনালীর সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
  • তেল মালিশ: শিশুর বুকে, পিঠে এবং পায়ে গরম সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করলে তার শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকে এবং কাশি কমে যায়।

কাশি হওয়ার কারণসমূহ:

  • ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ
  • ঠান্ডা বা ধুলাবালি
  • অ্যালার্জি বা শ্বাসনালীতে জমাট বাঁধা কফ
  • ধোঁয়া বা দূষণ

উপসংহার:

৫ মাস বয়সী শিশুর কাশি হলে তা অবহেলা করা উচিত নয়। ঘরোয়া প্রতিকার এবং ডাক্তারের পরামর্শে শিশুর কাশি দ্রুত নিরাময় করা সম্ভব। শিশুকে সর্বদা পরিষ্কার ও উষ্ণ পরিবেশে রাখা এবং যথাযথ সেবা প্রদান শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।


📌 ঠিকানা:

পাইনেল মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার, ২২২/১বি, সাউথ পীরেরবাগ, মিরপুর-২, ঢাকা -১২১৬।

📞 ফোন: ০১৬৮১০০৬৭২৬।

✎ রাজু আকন, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top